আত্মীয়


সাত মহাদেশের পাঁচ মহাসাগর। যে মহাসাগর গেঁথেছে পুরো বিশ্বকে তার আপন নক্সীকাঁথায়। কিন্তু আমাদের মহাসাগর একটাই। যার জল ছড়িয়ে আছে সাড়ে সাতশ কোটি মনুষ্য আত্মায়। যেখানে এক হয়ে গেছে মসজিদের কালো মার্বেল আর মন্দিরের পুষ্প বেদী। তাহলো প্রিয় সংগঠন 'আত্মীয়'। যার জল 'রক্ত'।
নদী মরে যাচ্ছে, সমুদ্র শুকিয়ে গেলে মানুষ হয়ে যাবে বিলুপ্ত অক্টোপাস! তাই বিশ্বাসের বুদ্বুদ গাঢ় উচ্চারণে বলে উঠে 'আত্মীয় মরবে না'। এ আত্মীয় রক্তের, এ আত্মীয়ের শুরু নিঃস্বার্থের পুণ্য ভূমি আখাউড়ায়। আর ফুসফুস হলো মানবতা।

যার শুরুটা নাছুর বান্দা মানুষ, জীবনের দীর্ঘ সময় বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের অভিজ্ঞতাজাত সমীর চক্রবর্তীর হাত ধরে। যিনি বিশ্বাস করেন সমাজে ভালো মানুষের অভাব নেই, অভাব কেবল সেই প্রাণোচ্ছল ডানপিঠে মুখগুলোকে একটি প্লাটফর্মে ঐক্যবদ্ধ করার মতো সংগঠন।

‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’ এই কথাকে বুকে ধারণ করে ‘এক সমুদ্র আত্মীয়’ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে যিনি শুরু করতে চান ব্যাপক সাংগঠনিক কার্যক্রম। প্রথমেই বিষযটি নিয়ে পরিকল্পনায় বসেন তাঁর প্রিয় তিন বন্ধু ও মানবিক মানুষ শেখ দীপু, সুজন সাহা এবং হৃদয় দেবের সাথে। তাঁদের সাহসের উপর ভর করে ২০১৮ সালের ১৭ আগষ্ট ডাকা হয় আখাউড়ার বাছাই করা ২৭ জন তরুণ সাংগঠনিক মানুষকে। তাঁরা হলেন-

১) মহিউদ্দিন মামুন-কর কর্মকর্তা
২) সমীর চক্রবর্তী-ব্যাংকার
৩) শেখ দীপু- ব্যাবসায়ী
৪) আশরাফ চৌধুরী আকিব-সরকারি চাকুরে
৫) হৃদয় দেব-বেসরকারী চাকুরে
৬) এ. আই সম্রাট খাদেম-স্কাউট লিডার
৭) এম আর আই রাকিব-স্কাউট লিডার
৮) এনামুল খন্দকার-সরকারি চাকুরে
৯) মেহেদী হাসান-চাকুরে
১০) জাবেদ হোসেন-
১১) ওমর ফারুখ মুন্না-চাকুরে
১২) নান্টু বনিক-ব্যাবসায়ী
১৩) মো. মাইনুল ইসলাম ভূইয়া
১৪) সুজন রবি দাশ-শিক্ষার্থী
১৫) মুন্নী খানম-শিক্ষার্থী
১৬) সোনিয়া-শিক্ষার্থী
১৭) শারমিন হক-শিক্ষার্থী
১৮) রেহানা হক-শিক্ষার্থী
১৯) রোনা আক্তার-শিক্ষার্থী
২০) রাকিবা হাবিব অয়ন-শিক্ষার্থী
২১) সাদেকা খাতুন চাঁদরিন-শিক্ষার্থী, ঢাবি
২২) সাদিয়া আফরিন তামান্না-শিক্ষার্থী
২৩) শুভ সাহা-চাকুরে
২৪) মো. ইসমাইল-চাকুরে
২৫) পূজা বিশ্বাস-শিক্ষার্থী
২৬) সুসলিমা আক্তার-শিক্ষার্থী
২৭) আকলিমা আক্তার-শিক্ষার্থী


তবে সেটা অনেকটা গুপ্ত আড্ডার মতো। পৌরশহরের মালদারপাড়ায় তৎকালিন শিক্ষক এবং বর্তমানে সরকারি চাকুরে আশরাফ চৌধুরী আকিবের কোচিং সেন্টারে। সেখানে উপস্থাপন করা হয় সংগঠনের নাম, কর্মপরিকল্পনা থেকে শুরু করে সকল কিছু। অবশেষে এক বাক্যে কাছে থাকার প্রত্যয়ে শুরু হয় আত্মীয়ের পথ চলা। এবছরেরই ৩১ আগস্ট তারিখ শতাধিক তরুণের উপস্থিতিতে সবার সামনে আত্মপ্রকাশ ঘটে আত্মীয়। প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে প্রথম থেকেই সংগঠনের দায়িত্বে রয়েছেন সমীর চক্রবর্তী।


তবে আত্মীয়ের সাংগঠনিক কার্যক্রমে প্রেরণা যোগান প্রিয় মুখ খাগড়াছড়ির মান্যবর সিভিল সার্জন এবং তিতাস পাড়ের জনপ্রিয় মানুষ ডা: শাহ আলাম গুণি শিল্পী এবং সহজ  মানুষ ডা: গুলজার হোসেন উজ্জ্বল। অবশ্য ২৭ আগষ্টের পর থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিল মানুষকে রক্তদানের পূন্য কাজ।

আত্মীয় শুধু রক্তদানেই সিমাবদ্ধ থাকবে না। নানা সামাজিক সাংস্কৃতিক কাজে তাঁর অংশগ্রহণ থাকবে জাগ্রতভাবে। যেমন ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে আত্মীয়ের মাসিক পাঠচক্রের আসর। তাছাড়া ‘শ্রোতার আসর’ আয়োজনসহ নানা সামাজিক, সাংস্কৃতিক কাজে অংশগ্রহণ এবং জ্ঞান-বিজ্ঞান প্রসারে উজ্জিবিত থাকবে সংগঠনটি।

মানুষকে ভালবাসার মতো মন আছে এমন যেকেউ এই সংগঠনের সদস্য হতে পারেন। যারা রক্তদান করতে ইচ্ছুক তবে নানা সীমাবদ্ধতায় ( উচ্চ রক্তচাপ, কম ওজন, ডায়াবেটিজ ইত্যাদি) রক্ত দিতে পারছেন না তারাও প্রেরণা দিতে সদস্য হয়ে থাকতে পারেন আমাদের সাথে।

এই অঞ্চলের যেসকল গুণি মানুষ দেশে বিদেশে ছড়িয়ে আছে এবং প্রবাস থেকে যারা এদেশের সমৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে তাদের সমন্বয় করে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ আখাউড়া গঠনে কাজ করে যাবে আত্মীয়।